নভেল করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ ঠেকাতে পাঁচ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার, ফলে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি থাকবে দেশের সব অফিস-আদালতে।
তবে হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিসসহ জরুরি সেবা সংস্থাগুলো এই ছুটির আওতায় থাকবে না। ছুটির সময় গণপরিবহন বন্ধ না হলেও চলাচল সীমিত হয়ে পড়বে।
বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নেওয়া কভিড-১৯ রোগের দেশে মহামারী ঠেকাতে সরকারের নানা কার্যক্রম তুলে ধরতে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এসে পাঁচ দিন সাধারণ ছুটির কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি জানান, আগামী ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।
২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ছুটি, তার পরের দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকছে। এরপর পাঁচ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে আবার ৩ ও ৪ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি।
ফলে মঙ্গল ও বুধবার অফিস-আদালত খোলা থাকলেও এরপর ছুটি দাঁড়াচ্ছে একটানা ১০ দিন।
ছুটির আওতায় কারা- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের জন্যই এই সাধারণ ছুটি প্রযোজ্য।
তবে হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্সের মতো জরুরি সেবা এই ছুটির আওতামুক্ত থাকবে বলে তিনি জানান। একইসঙ্গে তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দোকানসহ হাট-বাজার এই সময়ে খোলা থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “জরুরি প্রয়োজন ব্যতিত (খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ ক্রয়, চিকিৎসা ও মৃতদেহ সৎকার ইত্যাদি) বাড়ির বাইরে না আসার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।”
এই সময়ে বিভিন্ন অফিস-আদালতের প্রয়োজনীয় কাজ অনলাইনে সম্পাদন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “সরকারি অফিসগুলোর মধ্যে যারা প্রয়োজন মনে করবে, তারা অফিস খোলা রাখবে।”
ছুটিকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
করোনাভাইরাস: আক্রান্ত বেড়ে ৩৩, মৃত্যু ৩ জনের
ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং ধর্মীয় নেতাদের অনুশাসন কঠোরভাবে মেনে চলার ‘বিশেষ অনুরোধ’ জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, “জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অসুস্থ সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মসজিদে না যেতে বারবার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। তা ভঙ্গ করে একজন মিরপুরে মসজিদে যাওয়ার জন্য অন্য ব্যক্তিও আক্রান্ত হয়েছে।”
আগামী দুদিন খোলা রাখার বিষয়ে মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস বলেন, “কাল পরশু খোলা থাকবে, কারণ হচ্ছে আজ বন্ধ করে দেওয়া হলে মানুষ মুভ করতে পারবে না। সুতরাং ব্রিদিং টাইম দিতে হবে।”
কভিড-১৯ রোগে বিশ্বজুড়ে তিন লাখের বেশি আক্রান্ত ও ১৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর পর বাংলাদেশেও ৩৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মারা গেছে তিনজন।
এই পরিস্থিতিতে ভাইরাসের ব্যাপক বিস্তার ঠেকাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগেই ছুটি দেওয়া হয়েছে। জনসমাগমের মতো কর্মসূচিও বন্ধ হয়ে গেছে। স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচিও বাতিল করা হয়েছে।
জনপ্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে সচিবালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে মুখ্য সচিব কায়কাউস দেশে নভেল করোনাভাইরাস মহামারী ঠেকাতে সরকারের নানা কার্যক্রম তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে সবাই সম্মিলিতভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করলে সঙ্কট মোকাবেলা করা যাবে।
সূত্র, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম